বাংলা খাবারের তালিকায় বিকেলের নাস্তার সময় সিঙ্গাড়ার নামটা আসলেই জিভে জল আসে। সাধারণত সিঙ্গাড়ায় মাংস বা আলুর পুর ব্যবহৃত হয়, তবে নিরামিষ সিঙ্গাড়াও দারুণ সুস্বাদু হতে পারে যদি ঠিকভাবে বানানো হয়। এই রেসিপিতে আমরা তৈরি করবো মজাদার ও খাস্তা নিরামিষ সিঙ্গাড়া যা ছোট থেকে বড় সকলেরই প্রিয় হতে বাধ্য।


উপকরণ

সিঙ্গাড়ার খোলের জন্য:

·         ময়দা – ২ কাপ

·         তেল – ৪ টেবিল চামচ

·         লবণ – ১ চা চামচ

·         জিরা – ১ চা চামচ (ঐচ্ছিক)

·         পানি – পরিমাণমতো (ডো বানানোর জন্য)

পুরের জন্য (নিরামিষ মিশ্রণ):

·         আলু – ৩টি মাঝারি সাইজের (সেদ্ধ ও চটকানো)

·         মটরশুটি – ১/২ কাপ

·         কাঁচা লংকা – ২-৩টি (কুচি করা)

·         আদা – ১ চা চামচ (কুচি বা বাটা)

·         শুকনো লঙ্কা গুঁড়া – ১/২ চা চামচ

·         হলুদ গুঁড়া – ১/২ চা চামচ

·         ভাজা জিরা গুঁড়া – ১ চা চামচ

·         ধনে গুঁড়া – ১/২ চা চামচ

·         গরম মসলা – ১/৪ চা চামচ

·         লবণ – স্বাদমতো

·         তেল – ২ টেবিল চামচ

·         ধনে পাতা কুচি – ২ টেবিল চামচ

 

প্রস্তুত প্রণালী

১. খোল তৈরি:

১. প্রথমে একটি বড় পাত্রে ময়দা, লবণ, জিরা এবং তেল দিয়ে ভালো করে মেশান।
২. এরপর অল্প অল্প পানি দিয়ে শক্ত ডো তৈরি করুন।
৩. ডো তৈরি হয়ে গেলে একটি ভেজা কাপড় দিয়ে ঢেকে ২০-৩০ মিনিট রেখে দিন।

২. পুর তৈরি:

১. একটি প্যানে তেল গরম করে তাতে কুচি করা আদা ও কাঁচা লংকা দিন।
২. একটু নেড়ে সেদ্ধ মটরশুটি দিন এবং নরম হওয়া পর্যন্ত ভাজুন।
৩. এবার চটকানো আলু যোগ করুন।
৪. এরপর হলুদ, শুকনো লঙ্কা গুঁড়া, ধনে গুঁড়া, জিরা গুঁড়া ও লবণ দিয়ে ভালোভাবে মেশান।
৫. কিছুক্ষণ নেড়েচেড়ে শেষে গরম মসলা ও ধনে পাতা দিয়ে নামিয়ে নিন।
৬. পুর ঠান্ডা হতে দিন।

 

সিঙ্গাড়া তৈরি:

১. ডো থেকে ছোট ছোট লেচি কেটে নিন।
২. প্রতিটি লেচি পাতলা করে বেলুন ও অর্ধেক করে কেটে নিন।
৩. প্রতিটি অর্ধচন্দ্র অংশকে কোন আকারে ভাঁজ করে কজিরার মতো তৈরি করুন।
৪. ভেতরে ১ চামচ পুর দিয়ে মুখ বন্ধ করুন। আঙুলে পানি লাগিয়ে ভালোভাবে সিল করে দিন।
৫. এভাবে সব সিঙ্গাড়া তৈরি করে নিন।

 

ভাজার প্রক্রিয়া:

১. একটি কড়াইয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণ তেল গরম করুন।
২. তেল গরম হলে আঁচ একটু কমিয়ে দিন এবং সিঙ্গাড়া গুলো ধীরে ধীরে ছাড়ুন।
৩. সোনালি বাদামী রঙ হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। বেশি আঁচে ভাজলে বাইরেটা পুড়ে যেতে পারে, তাই মাঝারি আঁচে ধৈর্য ধরে ভাজা জরুরি।
৪. তেল থেকে তুলে টিস্যু পেপারে রাখুন যাতে অতিরিক্ত তেল ঝরে পড়ে।

 

পরিবেশন:

গরম গরম সিঙ্গাড়া পরিবেশন করুন টমেটো সস, চাটনি কিংবা কাঁচা মরিচের সাথে। সঙ্গে যদি এক কাপ ধোঁয়া উঠা চা থাকে, তবে স্বাদ দ্বিগুণ বেড়ে যায়।

 

টিপস:

·         খোল মচমচে করতে তেলে "মোয়ন" ভালোভাবে মেশানো জরুরি।

·         পুরে আপনি চাইলে কাঁচা পেঁপে, গাজর, বাঁধাকপি বা সয়াবিনও যোগ করতে পারেন।

·         বেশি পুর না দিয়ে খোলটা ভালোভাবে সিল করুন, তাহলে ভাজার সময় ফেটে যাবে না।

 

উপসংহার

নিরামিষ সিঙ্গাড়া শুধু শাকাহারীদের জন্য নয়, যে কেউ এটি উপভোগ করতে পারেন। এটি তৈরি সহজ এবং প্রতিদিনের চায়ের সঙ্গে কিংবা অতিথি আপ্যায়নে চমৎকার এক খাবার। আপনি চাইলে একবারে অনেকগুলো বানিয়ে ফ্রিজে সংরক্ষণ করে রাখতে পারেন এবং প্রয়োজনমতো বের করে ভেজে নিতে পারেন।

 আশা করি এই রেসিপি অনুসরণ করে আপনি ঘরেই সুস্বাদু নিরামিষ সিঙ্গাড়া তৈরি করতে পারবেন। ভালো লাগলে বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন!